নরসিংদীর পলাশে যুবদল নেতার মদদে নির্মাণাধীন একটি সিমেন্ট কারখানায় হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে আহত হয়েছে কারখানার অন্তত ৭ শ্রমিক। এসময় লুট করা হয়েছে কোম্পানির কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মালামাল।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নে নিমার্ণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট ঢাকা লিমিটেড কারখানার ড্রেজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে হামলার খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও কারখানাটির কর্মকর্তারা জানান, বেলা ১২ টার দিকে হঠাৎ করে নদীপথে ২টি ট্রলারে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে কারখানার পাশের ড্রেজারে হামলা চালায়। সেখানে শ্রমিকদের ৬ টি কক্ষে ঢুকে হামলাকারীরা বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে মোবাইল, ল্যাপটপ ও গুরুত্বপুর্ণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এসময় বাধা দিতে গেলে ড্রেজারের ৭ জন শ্রমিক আহত হয়। লুটপাটের পর হামলাকারীরা পুণরায় ট্রলারে করে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে পলাশ থানা পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
গোপন সুত্রে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরোক্ষ মদদদাতা হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির হোসেন’র বিরুদ্ধে। হামলার নেতৃত্ব প্রদানকারী বিল্লাল ও তার সহযোগীরা যুবদল নেতা মনিরের অনুসারী। কিছুদিন আগে যুবদল নেতা মনির, বাদল ও নজরুল মাস্টার এই কোম্পানির ড্রেজারের কাজ তাদেরকে দেওয়ার দাবী করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ নিজেরাই কাজ করার কারনে, তাদেরকে মানা করে দেন। তারই প্রেক্ষিতে এই হামলাট ঘটনা। মনির হোসেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারনে, প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
নিমার্ণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মাহবুর রহমান জানান, ২০২২ সাল থেকে কারখানাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। যেখান থেকে ঘন্টায় ২৫০ ম্যাট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদন হবে। কারখানাটিতে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা দাবি করে আসছে। তাদের চাঁদা না দেওয়ায় দিনে দুপুরে এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার পর থেকে সকলের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক কাজ করছে।
হামলার মদদদাতার বিষয়ে যুবদল নেতা মনির হোসেন মুঠোফোনে প্রতিবেদককে জানান, হামলার ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে কেউ কিছু বলে থাকলে,সেটা মিথ্যা। কারন ঘটনার সময় আমি নরসিংদীর আদালতে ছিলাম। পরে সেখান থেকেই ঢাকা হাসপাতালে চলে যাই। কিছুদিন আগে ড্রেজারের কাজ করতে আমরা গিয়েছিলাম, তারা পরে জানাবেন বলেছেন। হামলার নেতৃত্বদানকারী বিল্লাল যেহেতু বিএনপির অনুসারী,সে হিসেবে তাকে বিভিন্ন মিটিং মিছিলে আমার সাথে দেখা যেতেই পারে। তাই বলে আমার মদদে হামলা হয়েছে বলতে পারেনা।
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।