নরসিংদী জেলা কারাগারের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার,পলাতক আসামী গ্রেফতার ও আত্মসমর্থনকারীদের তথ্য জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে পুলিশ সুপার সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্নিবাণ চৌধুরী,ফজল ই খুদা,শামসুল আরেফিন,সহকারী পুলিশ সুপার মেসবাহউদ্দিন ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ খোকন চন্দ্র সরকারসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ১৯ জুলাই ৭১ এর পরাজিত শক্তি বিপুল সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী ও নাশকতাকারীদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নরসিংদী জেলা কারাগারসহ নরসিংদী জেলার সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনায় ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ,অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুটপাট করে। এসময় নরসিংদী জেলা কারাগারের ৯জন জঙ্গীসহ ৮২৬ জন বন্দী সকলেই পালিয়ে যায়। লুণ্ঠিত হয় জেলা কারাগার অস্ত্রাগারের ৮৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৭ হাজার রাউন্ড গুলি। নাশকতাকারীরা নরসিংদীর বিভিন্ন থানায় আক্রমনের চেষ্টা করলেও পুলিশের প্রতিরোধে সফল হতে পারেনি।
তিনি আরো জানান, ১৯ জুলাই দুপুরের পর থেকেই নাশকতাকারীরা নরসিংদীর জেলখানা মোড় থেকে সদর উপজেলা মোড় পর্যন্ত অবস্থিত জেলা প্রশাসন কার্যালয়,পুলিশ সুপার কার্যালয় ও আদালত ভবনসহ সরকারী অতি গুরত্বপূর্ণ কার্যালয়গুলোতে আক্রমনের চেষ্টা চালায়। এসময় জেলা পুলিশের সাথে নাশকতাকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ গোলাগুলি হয়। প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার ব্যাপক গোলাগুলির পর রাত সাড়ে ১০ টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এসময় জেলা পুলিশের ৩৩ জন সদস্য আহত হয়।
ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন অভিযানে সিটিটিসি, র্যাব ও জেলা পুলিশ পলাতক ৪ জন জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছেন। জেলা প্রশাসনের গণ বিজ্ঞপ্তির পর জেল পলাতক ৪৮১ জন আত্মসমর্পন করেছেন। জেলা পুলিশের অভিযানে লুণ্ঠিত ৪৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৯১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তাছাড়াও লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারে তথ্য প্রদান করে সহায়তা করার জন্য জেলার সকল স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপনসহ প্রতিটি অস্ত্রের জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছেন পুলিশ।
গত ১৯ জুলাইয়ের ঘটনায় নরসিংদীর বিভিন্ন থানায় ১১ টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ১৮৪ জন নাশকতাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।