শিরোনাম :
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫২ অপরাহ্ন

রায়পুরায় বিএনপি তুমি কার?

মাইনউদ্দিন সরকার / ১৪২ বার
আপডেট : সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় বিএনপি নেতাদের দলীয় কোন্দলে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি ও আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন ইস্যুতে সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে অনৈক্য দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাদের আধিপত্য বিস্তার ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী নিয়ে দেখা দিয়েছে এই অনৈক্য। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত, সেখানে বিএনপি ব্যস্ত নিজেদের ঘর ভাঙ্গতে। কোন্দল নিরসনে দলীয় হাইকমান্ড যদি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন না করেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে চরম খেসারত দিতে হবে বলে মনে করেন, দলের তৃণমূল নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 


তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ৫ আগষ্টের পর সারাদেশে আওয়ামী দোসরদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান থাকলেও রায়পুরায় বিএনপির নেতারা ছিলেন, ঠিক উল্টো পথে। জেলার অন্যান্য উপজেলায় আওয়ামী দোসররা পলাতক থাকলেও রায়পুরায় বহাল তবিয়তে। উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগের দলীয় পদধারী চেয়ারম্যান বহাল তবিয়তে থেকে পরিষদ পরিচালনা করছেন। আর তাদের পাশের চেয়ারে বসে তদারকি করছেন, জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতারা। বিগত এক বছরে সারাদেশে আওয়ামী দোসরদের আটক থাকলেও রায়পুরায় কোন আটক নেই। গুঞ্জন রয়েছে বিএনপি নেতাদের সাথে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের কারনেই এখনো তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রায়পুরা উপজেলায় কেন্দ্রীয় কমিটিসহ জেলা বিএনপির একাধিক নেতার অবস্থান হওয়ায় লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে বিএনপি। নেতারা যে যেভাবে পারেন নিজের স্বার্থ হাসিল করতে ব্যস্ত।
রায়পুরায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন, প্রশাসনে প্রভাব খাটিয়ে খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ, বিভিন্ন ভাতা প্রদানে অনিয়মসহ মামলা বানিজ্যের অভিযোগ আছে। যার কারনে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন। সম্প্রতি মনোনয়ন প্রত্যাশাকে কেন্দ্র করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে নেতাকর্মীরা। বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল,জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফাইজুর রহমান,জামাল চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম বাদল,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল আমিন ভুইয়া রোহেল,উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন,সাবেক সভাপতি এমএন জামান মনোয়ন প্রত্যাশী। এর মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল ছাড়া সবাই একজোট হয়েছেন মনোনয়ন পেতে। তাদের দাবী আশরাফ উদ্দিন বকুল ছাড়া যে কেউ মনোনয়ন পেলে মেনে নিবেন। তাই প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করে, আশরাফ উদ্দিন বকুলকে রায়পুরায় অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ মনোনয়ন পেলেও মনোনয়ন ছিনতাইয়ের হুমকি প্রদান করেন তারা। অপরদিকে আশরাফ উদ্দিন বকুল ইস্যুতে জেলা বিএনপি থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম স্থগিতসহ জেলা বিএনপির দুজন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর দু’দিন পরই আবার আশরাফ উদ্দিন বকুলকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরদিনই
আশরাফ উদ্দিন বকুলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কারণ দর্শানোর নোটিশটি ভুয়া বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় রুহুল কবির রিজভী স্পষ্টভাবে বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি ভুয়া কারণ দর্শানোর নোটিশ তৈরি করা হয়েছে। এই নোটিশের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এমন কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি।
কারণ দর্শানোর নোটিশ নাটকীয়তা নেট দুনিয়ায় এখন ভাইরাল। নেটিজেনরা বলছেন, রায়পুরা বিএনপি তুমি আসলে কার?

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ