চেতনা ডেস্কঃ আজকাল শৈশব যেন ডিকশনারীতে বন্দী এক পুরোনো শব্দ। হেসেখেলে জীবন শুরুর কথা থাকলেও, শিশুরা বাধ্য হচ্ছে অর্থ উপার্জনের এক নিষ্ঠুর চক্রে। খেলার সামগ্রীর বদলে তাদের হাতে সংসারের বোঝা। কেউ ইঁট ভাঙছে, কেউ কারখানায়, কেউ বা আবার ভিক্ষা করছে রাস্তায়।
দারিদ্র্যতা জীবনের এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরুপায় হয়ে সন্তানদের কাজে পাঠাতে বাধ্য হন অনেক বাবা-মা। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও শিশুদের ভুল বুঝিয়ে শ্রমে নিযুক্ত করে। এর সংখ্যাও কম নয় বলে জানান সমাজ বিশেষজ্ঞরা। দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এই শিশুরা তাদের অধিকার সম্পর্কে জানে না। অসুস্থ হলেও তাদের দেখার কেউ নেই। অথচ তাদেরও পড়তে, খেলতে ইচ্ছে করে বন্ধুদের সাথে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব, সামাজিক সুরক্ষার দুর্বলতা এবং আইনের দুর্বল প্রয়োগই মূলত শিশুদের শ্রমে বাধ্য করে। তবে কিছু সংস্থা ও মানুষ এখনো তাদের মুখে হাসি ফোটাতে, শিক্ষার ব্যবস্থা করতে এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এই শিশুদের পাশে আমাদের সবার দাঁড়ানো উচিত। তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বোঝাতে হবে জীবন শুধু বেঁচে থাকা নয়, সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ারও। সামাজিক সংগঠনের নেতারা মনে করেন, এটি আমাদের সকলের সামাজিক দায়বদ্ধতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুশ্রম বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন, তার সঠিক প্রয়োগ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের আরও বেশি নজর দেয়া প্রয়োজন। শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, যাতে গরিব শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পায়। বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে, যেন মানুষ শিশুশ্রমের কুফল সম্পর্কে জানতে পারে।
আর কোনো শিশুর শৈশব যেন অর্থের লোভে বন্দী না হয়। তাদের ডানা মেলতে দিন, উড়তে দিন আকাশের ঠিকানায়। ঝড়ে পড়া এসব শিশুদের শুনতে দিন সুন্দর ভবিষ্যতের গল্প।