নরসিংদীতে আলোচিত ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার এবং পরে তা দুই পুলিশ কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান ও কোর্ট পরিদর্শক জাকির হোসেনসহ ৬ জন মিলে বিক্রি করার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে, তাদের সম্পৃক্ত থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিবির ওসি কামরুজ্জামান তার অপকর্ম ডাকার জন্য পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। জব্দ তালিকায় ওই গাঁজার মূল্য ১৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেখানো হয়। আদালতের নির্দেশে এই মাদক ধ্বংস করার কথা থাকলেও, কামরুজ্জামান তা না করে নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী এলাকার চিহ্নিত মাদক সম্রাজ্ঞী মায়া প্রধানের কাছে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর নড়েচড়ে বসেন জেলা পুলিশের বড় কর্মকর্তা। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কলিমুল্লাহকে দায়িত্ব দেন। তদন্তে প্রাথমিকভাবে ৬ পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়। এরা হলেন, জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান, কোর্ট পরিদর্শক জাকির হোসেন, ডিবির উপপরিদর্শক আঃ গাফফার, মালখানার এসআই শামীমুর রহমান, ডিবির কনস্টেবল রোমান ও কোর্ট কনস্টেবল কামরুন নাহার। এরপর থেকেই ডিবির ওসি কামরুজ্জামান পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তোলেন। আরও জানা যায়, পুলিশ সুপার অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকায় ডিবির ওসিকে দিয়ে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। এর মধ্যে দুটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও একটি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার সাহায্যে অনুদান ছিল। তবে, কামরুজ্জামান এই বিষয়টিকে পুঁজি করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া এসপিগিরি করতে রবিউল নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। নরসিংদীর একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান একজন সৎ ও কর্মঠ কর্মকর্তা। তিনি যোগদানের পর থেকে জেলার অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার নেতৃত্বে নরসিংদীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নরসিংদীর সচেতন মানুষ বলছেন, বর্তমানে নরসিংদীতে সাধারণ মানুষ পুলিশ সুপারসহ পুলিশের কাছে নির্বিঘ্নে যেতে পারছে, যা এক সময় ছিল দুর্লভ। পুলিশ সুপার নরসিংদীর জনগণের কাছে একজন সৎ, দক্ষ ও সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। এই বিষয়ে ইন্সপেক্টর কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল হান্নান জানান, তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে ৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এছাড়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইন্সপেক্টর এসএম কামরুজ্জামান এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।