গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আসুন আমরা আগামী দিনগুলোতে শহিদ জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের আধুনিক, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করি এবং এত ত্যাগের বিনিময় এই অর্জনকে সুসংহত এবং ঐক্যকে আরও বেগবান করি।’
প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ নয়-এ মন্তব্য করে খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে ছাত্র-যুবকসহ দেশবাসীর কাছে আহ্বান রাখতে চাই, আসুন প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ নয়, পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি বাসযোগ্য উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।’
লন্ডনে নিজের ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন আছেন। গত ৭ জানুয়ারি তাকে কুয়েতের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডন নিয়ে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ছাড়পত্র দেয়। বর্ধিত সভায় দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার বক্তব্যের ঘোষণা দিলে উপস্থিত নেতারা দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। খালেদা জিয়া যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন পাশে ভার্চুয়ালি বসেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের চেয়ারপারসনের বক্তব্যের সময় তৃণমূলসহ সিনিয়র নেতারা পিনপতন নীরবতার মধ্যে তাদের নেত্রীর কথা শোনেন। এ সময় অনেক নেতাকে আবেগাপ্লুতও হয়ে পড়তে দেখা যায়।
বক্তব্যের শুরুতেই সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে যারা শহিদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই-আগস্টের ফ্যাসিবাদী শাসনের নির্মম ভয়াবহ দমননীতির কারণে গণহত্যায় যারা শহিদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাান। একই সঙ্গে যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি জানান আন্তরিক সমবেদনা। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর পর নেতারা আবার একসঙ্গে ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হয়েছে। সেজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও আমি সব সময় আপনাদের পাশেই আছি। দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রের জন্য, আমার মুক্তির জন্য আপনারা নিরন্তর সংগ্রাম করেছেন। আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লাখ মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছেন। এখনো তারা আদালতের বারান্দায় ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আপনাদের শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে।’
সকাল ১১টায় বিএনপির এই বর্ধিত সভা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। লন্ডন থেকে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। বর্ধিত সভায় সারা দেশের তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার নেতা এতে অংশ নেন।
(সংগৃহীত)