রাত পোহালেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট গ্রহনের সকল প্রকার প্রস্তুতি, শেষ করেছে নরসিংদী জেলা প্রশাসন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে ব্যালট বাক্স। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আবারো নির্বাচিত হলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে ভোট বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনসহ এক দফা দাবিতে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচনের দাবিতে, ৬ জানুয়ারি শনিবার থেকে ৮ জানুয়ারি সোমবার পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় তারা। শেখ হাসিনা বারবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিলেও ডামি বা পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে সরকার। সরকার মিথ্যা ও গায়েবী মামলায় হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলহাজোতে আটক রেখেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। নিবন্ধিত প্রধান বিরোধীদল বিএনপি সহো ২৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগ সহজেই নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অপরদিকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিতদের নির্বাচনে অংশ গ্রহণে কোন বাধা না থাকায়, শতাধিক আসনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে নৌকার প্রার্থীদের। সেসব এলাকায় জমে উঠেছে নির্বাচন। লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে ঘটেছে আগুন দেয়ার ঘটনা। আর তাই নানা কারণে নির্বাচনের দিন সহিংসতা হতে পারে বলে মনে করছেন তৃনমূলের নেতাকর্মীসহো সাধারণ ভোটাররা। এদিকে নির্বাচনে সকল ধরনের ঝুঁকি এড়াতে সারা দেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করেছে সরকার। নির্বাচন কমিশনের অধীনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে তারা।
আন্তর্জাতিক বাজারে রয়েছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করে ২০ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষাকারী বাহিনীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সৈন্য সরবরাহকারী দেশ হিসেবেও আন্তর্জাতিক মহলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এ দেশের নির্বাচন। নির্বাচনকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই শেখ হাসিনা সরকার যাতে আন্দোলনরতো বিরোধী দলগুলোর সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে কিছু ছাড় দিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তা চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো কথা রাখেনি শেখ হাসিনা সরকার। আর তাই ঢাকায় নির্বাচন পর্যবেক্ষকের দল পাঠিয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে আন্দোলনরতো বিরোধীদলগুলোর অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনা সরকারের, এই একতরফা নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী কোন ব্যবস্থা নেয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি, ঝড় তুলবে রাজনৈতিক মঞ্চে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।