নরসিংদীর রায়পুরায় ১০ বছরের শিশু আবু তালহাকে অপহরনের পর বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার পাভেল ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে। তার সাথে থাকা অপহৃত রাব্বি ও আতিকুল সুকৌশলে পালিয়েছে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় নরসিংদীর মাধবদী থানার কান্দাইল এলাকার রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে শিশু তালহাকে উদ্ধার করে স্বজনরা। এর আগে অপহরণকারীরা তাকে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রায়পুরা উপজেলার উত্তরবাখরনগর ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে অপহরণকরে৷
অভিযুক্ত পাভেল(১৫) একই এলাকার ধন মিয়ার ছেলে। তার বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায় নি। তারা এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
শিশু তালহা উপজেলা উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেনীর ছাত্র৷ অপহৃত অপর দুই শিশু রাব্বি ও আতিকুল তারা লোচনপুর এলাকায় বাসিন্দা তারাও তার সাথে পালিয়েছে বলে জানান তালহা।
ভুক্তভোগী ও স্বজনরা প্রতিনিধিকে জানান, একই এলাকার পাভেল ও ভুক্তভোগী গত ছয় মাস আগে পাখির বাসা নিয়ে ধন্দ হয়। শুক্রবার বিকেলে দোকান থেকে রুটি কিনে আসার পরে চোখ মুখ বেঁধে অপহরণকারীরা তালহা ছাড়াও আরোও ২ জন শিশুকে অপহরণ করেছে। এরপর তারা ১২ হাজার টাকায় শিশু তালহাকে তাদের অন্য চক্রের সদস্যের হাতে তুলে দেয়। সুকৌশলে তানহা ও তার সাথে দুই শিশু পালিয়ে যায়।
উদ্ধারের পর শনিবার দুপুরে শিশু তালহা তার সাথে ঘটে যাওয়া সেই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেয়। সে জানায়, “শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশে একটি দোকানে গেলে একই এলাকার ধন মিয়ার ছেলে পাভেল প্রলোভন দেখিয়ে একটি রুটি কিনে দেয়। পরে বাড়িতে আসার পথে চোখ মুখ বেঁধে একটি মাক্রো গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা অন্য একটি চক্রের নিকট আমাকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। অপহরণ কারিরা আমার চোখ গলায় প্রচন্ড আঘাত করে। চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না, অন্ধ করে দিয়েছে এসময় অপহরণকারা বলেন “ওরে ধইরা লইয়া আয়, ওরে জবাই করে চোখ মুখ খুলে ভিক্ষায় নামায় দে”। পরে আমার সাথে থাকা রাব্বি ও আতিকুল সেখান থেকে পালিয়ে আসি। জড়িতদের কঠিন বিচার চাই।”
তালহার বাবা দুলাল মিয়া জানান, ‘গতকাল বিকাল থেকে তালহা নিখোঁজ নেই। পরে সম্ভাব্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। শনিবার সকালে এলাকার মাইকে ঘোষণা দেই। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি ছবি দেখে খোঁজ পাই। উদ্ধার করা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারি মাধবদীর কান্দাইল এলাকায় রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়িতে আহত অবস্থায় রয়েছে। এরপর বাড়ি থেকে লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে সকাল ১০ টায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসি৷ ঘটনায় জড়িতদের কঠিন বিচার দাবি করছি। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেছি। থানায় অভিযোগ দিবো।’
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তালহার বাবা।
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন ও শাহিন বলেন, এমন নেক্কার জনক ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে সকলে হতবাগ বিস্মিত। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি করছি। যাতে সমাজে এমন ঘটনা না ঘটে।
রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মো আজিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর মাঝে ঝামেলার কথা শুনেছি। ঘটনার পর পর ছায়া তদন্তে নেমেছে পুলিশ।