কে এইচ নজরুল ইসলাম, মনোহরদীঃ অর্থ আত্মসাৎ, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবা খানের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সরকারী দফতরে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মনোহরদী উপজেলা প্রেস কাবের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শাকিল এর দাখিলকৃত অভিযোগের বিবরণ থেকে এই তথ্য জানা যায়।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, যথাযথভাবে উপজেলা পরিষদের আয় ও ব্যয়ের হিসাব দেননি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবা খান। উপজেলা পরিষদের অর্থ ব্যয় করেছেন নিজের ইচ্ছেমতো। এমনকি পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায়ও এসব বিষয়ে কোনো তোয়াক্কা করেননি তিনি। উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শিল্পপতিদের কাছ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এই যজ্ঞ থেকে রেহাই পায়নি মনোহরদীর জনপ্রতিনিধিরাও।
বিবরণে আরো জানা যায়, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে বিজয়ী করার জন্য তার ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকে নগদ ৯০ লক্ষ টাকা নেন হাসিবা খান। এরই সুবাদে সাবেক শিল্পমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে পুরো উপজেলা জুড়ে দেখিয়েছেন ক্ষমতার দাপট। অথচ জনগণের ব্যাপক সমর্থন ও বেশি ভোট পাওয়া সত্বেও নির্বাহী ক্ষমতার জোরে নির্বাচনে পরাজিত দেখানো হয় সাইফুল ইসলাম খান বীরুকে। আর এ নিয়ে এখনো চলমান রয়েছে মনোহরদী ও বেলাব আসনের মানুষের নানান জল্পনা কল্পনা। এছাড়া দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাহালুল এর মাধ্যমে চল্লিশ হাজার টাকার রশিদের বিনিময়ে উপজেলার অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন পাচঁ লক্ষ টাকা এই দূর্নীতি পরায়ণ হাসিবা খান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে সরকারি দিবসগুলো পালনে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা’র মালিকসহ ব্যবসায়ীদের অবৈধভাবে মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য করতেন তিনি। আর এই দুঃসাহস ও অনৈতিক কর্মকান্ডের যোগসাজগে ছিলো জুলাই–আগস্ট আন্দোলনে গনহত্যার অন্যতম হোতা উপজেলার পীরপুর গ্রামের ২৭ তম ব্যাচের ক্যাডার পুলিশ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন। উপজেলার সবার কাছে যাকে অভিবাভক হিসেবে পরিচয় দিতেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবা খান। মেজর সিনহা হত্যাকালে কক্সবাজারের এএসপি হিসেবে কর্মরত ছিল এই ইকবাল হোসাইন। বর্তমানে গণহত্যার দায়ে এখন জেল হাজতে রয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর মনোহরদীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন হাসিবা খান।