শিরোনাম :
নরসিংদী জেলা পরিষদের চেয়ানম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদান জার্মান সফরে ইআরডি প্রতিনিধি দলকে রাষ্ট্রদূত মোশাররফ ভুঁইয়ার শুভেচ্ছা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে কোল্ডস্টোরেজে ১৯ লাখ ডিম এসএসসি ফলাফলে নরসিংদীর এনকেএম হাইস্কুল দেশ সেরা নরসিংদীতে মাদ্রাসা প্রধানদের সাথে একাডেমিক কার্যক্রম উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নরসিংদী ও পলাশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী আনোয়ার এবং সৈয়দ জাবেদ জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান নরসিংদীতে নগদের ছিনতাইকৃত টাকার আংশিক উদ্ধারসহ আটক ৩ নরসিংদীতে রিকশা চালকদের মাঝে জেলা বিএনপির পানি ও ছাতা বিতরণ কালের কণ্ঠ রায়পুরা প্রতিনিধি আব্দুল কাদিরের পিতৃ বিয়োগ
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৪১ অপরাহ্ন

নরসিংদীতে শতবর্ষী “বটতলী বৈশাখী মেলা”তে উপচে পড়া ভিড়

হারুনুর রশীদ ( রায়পুরা) / ৮৪ বার
আপডেট : সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪

বৈশাখী মেলা আবহমান গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতির একটি অংশ। পয়লা বৈশাখ আর বৈশাখী মেলা যেন বাঙালির প্রাণের স্পন্দন।
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পৌর এলাকার কাঁকন নদীর তীরে বটতলীতে ব্রিটিশ আমল থেকে ঐতিহ্যবাহী “বটতলী বৈশাখী মেলা” হয়। রোববার (১৪ এপ্রিল) ও দিনব্যপি চলে এ মেলা।
রোববার বিকেলে মেলা প্রাঙ্গনে গিয়ে দেখা যায় হরেক রকম জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। মেলা প্রাঙ্গনে নববর্ষের সাজে সজ্জিত হয়ে আগত হয়েছেন সব ধর্মের ছোট বড় সব বয়সী মানুষ। মেলা দেখতে ও হরেক রকম কেনাকাটা করতে হাজার হাজার ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গন। মেলায় এসে ক্রেতা বিক্রেতারা বেজায় খুশি।
স্থানীয়রা জানান, বাঙালির কৃষ্টিকালচার আর ঐতিহ্য নিয়ে বর্ণিল সাজে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এ দিনটি বিশেষ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করে। গ্রামীণ এ মেলাটি শতবছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সব ধর্মের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সার্বজনীন উৎসবের এক অনবদ্য উদাহরণ। যা চলছে এক শত বছরের অধিক সময় ধরে। বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষণ মাটির তৈরি খেলনাসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র। এ ছাড়াও নানা স্বাদের মুড়ি-মুড়কি জিলাপি মাটির জিনিসপত্র হরেক রকমের জিনিসপত্র তো রয়েছেই।
মেলায় আগত দর্শনার্থী হারিছ মিয়া বলেন, বাপ চাচার হত ধরে ছোট্টো থেকে প্রতিবছর এ মেলায় আসি। এবারও ব্যতিক্রম নয়, ছেলে মেয়ে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। তারা অনেক আনন্দ করেছে, এখন কেনা কাটা করে বাড়ি ফিরছি।
শিশু চয়নীলা বলেন, বাবা মা’এর সাথে এবার মেলায় এসেছি। মেলায় নানান মজার খাবার খেয়েছি। অনেক খেলনা কিনেছি। বাসা থেকে বের হতে পারিনা আজ মেলায় এসে খুব আনন্দ উপভোগ করি।
মেলায় আগত লেলিন বলেন, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ নিয়ে আসে নতুনের বার্তা, যা নবরূপে একাত্ম হয়ে বিশেষ কৃষ্টির মহিমায় রূপায়িত হয়। প্রতিবছর এ মেলায় আসি। মেলায় না আসা পর্যন্ত যেন আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায় না। পরিবারের জন্য মুড়ি মুড়কি মিষ্টি মেয়ের জন্য খেলনা কিনেছি। খুব ভালো লাগছে।
মৃৎশিল্প বিক্রেতা কাজল রাণী বলেন, শিবপুর উপজেলা থেকে ৩০ বছর যাবৎ এ মেলায় মাটির জিনিস পত্র নিয়ে আসি। এখন মাটির জিনিস পত্র তৈরি করতে অনেক খরচ। বেশ কিছু টাকা ভালো মাটি কিনা ও সংগ্রহে ব্যয় হয়। পেশার তাগিদে তৈরি এবং বিক্রিতে কষ্টে দিনাতিপাত করছি। প্লাস্টিকের জিনিস পত্রের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মাটির জিনিস পত্র বেচা বিক্রি খুব কম।
বিক্রেতা হারাধন সুত্রধর বলেন, এ মেলা দীর্ঘ শত বছর যাবৎ বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে জমে। বেশ কদর রয়েছে। দেখে আসছি মেলায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এ বছর লোকসমাগম এবং বেচা বিক্রি খুব কম।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন দাস বলেন, একসময় মেলার আশপাশের পুরো এলাকা পরিণত হতো বছরের প্রধান উৎসবে। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার পরিবারগুলো আগেই আত্মীয়স্বজনকে মেলার বিশেষ দাওয়াত দিতো। মেলায় খরচ করবে বলে আগেই টাকা জমাতো। মেলার অতীত সে ঐতিহ্য আজ অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে। তবুও ব্রিটিশ আমল থেকে প্রতিবছর এ মেলা জমে আসছে।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সুভাষ বলেন, আমার বয়স ৭০ বছর। আমি ছোট কাল থেকে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা করে আসছি। বাপ দাদার কাছে ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা এ মেলার কথা অনেক শুনেছি। এ বছরও মেলা বেশ জমেছে।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ