নরসিংদীর শিবপুর পৌরসভার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। ফলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিবপুর পৌরবাসী। জানাযায়, ১৪ সেপ্টেম্বর -২০২৫ থেকে শিবপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, ৪ মার্চ ২০২৫ থেকে সহকারী প্রকৌশলী, এর আগে থেকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ৪ মার্চ ২০২৩ তারিখ থেকে হিসাব রক্ষক কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। ফলে কোন প্রকার উন্নয়ন কাজ করতে পারছেন না পৌর প্রশাসক। ৩ জুন ২০২৫ তারিখে সহকারী প্রকৌশলী পদে মনোহরদী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুব আলমকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিলেও তিনি শিবপুর পৌরসভায় নিয়মিত অফিস করেন না। কার্য সহকারীও বদলী হয়ে গেছে। ফলে কর্মকর্তা শূন্য শিবপুর পৌরসভার প্রকৌশলী বিভাগ।
এমতাবস্থায় নাগরিকদের কাঙ্খিত সেবা দিতে না পাড়ায় বিপাকে পড়েছেন প্রশাসক মু. আব্দুর রহিম।
জানাযায়, ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রী, নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া শিবপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করেন। যার মোট আয়তন ধরা হয়েছে ৯.৮ বর্গকিলোমিটার ও মোট জনসংখ্যা হলো ২৫ হাজার ৪৯১ জন (২০২২ সালের জন শুমারী ও গৃহগননা অনুয়ায়ী)। পৌরসভাটি গঠিত হওয়ার পর ৭ সেপ্টেম্বর -২০০৬ থেকে ১৪ নভেম্বর -২০০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রথম প্রশাসক ছিলেন নরসিংদী জেলা বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার। মাত্র তিন মাস দায়িত্ব পালন করার পর তাকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। এরপর থেকে প্রশাসক হিসেবে প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এটি একটি ’গ’ শ্রেণীর পৌরসভা। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১৯ বছরেও কোন নির্বাচন না হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বর্তমানে পৌর প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মু. আব্দুর রহিম। তিনি ৪ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।
জানাযায়, ২০০৬ সালে পৌরসভা ঘোষনা করার পর সীমানা সংক্রস্ত বিষয় নিয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে মামলা করেন মাছিমপুর ইউপির মহিলা সদস্য স্মৃতি বেগম ও চক্রধা ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন। তারা মাছিমপুর ইউনিয়নের বাজনাব ও বান্দারদিয়া, চক্রধা ইউনিয়নের আশ্রাফপুর গ্রামকে বাদ দেওয়ার জন্য এই মামলা করেন। মামলার পর থেকে মাছিমপুর ও চক্রধা ইউপির নির্বাচনও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে মামলা নিস্পত্তি হলেও নির্বাচন করার কোন উদ্যোগ নেই। ফলে এটি নামেই পৌরসভা, কাজে নেই। যার কারলে এটি তৃতীয় শ্রেণীর পৌরসভাই রয়েছে। সেজন্য সরকারী বরাদ্দও কম আসে। পৌরবাসী নিয়মিত কর প্রদান করে ঠিকই, কিন্তু উন্নয়ন সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রবাদে আছে- ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার- এই হলো শিবপুর পৌরসভার বাস্তবতা।
এ ব্যাপারে আমার দেশকে পৌর প্রশাসক মু. আব্দুর রহিম বলেন, পৌরসভার নাগরিকদের জন্ম নিবন্ধন ও ভাতাদি কাজ চলমান আছে। পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা না থাকায় কোন উন্নয়ন কাজ করা যাচ্ছে না। এসকল পদ পূরণের জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা আছে।