চেতনা ডেস্ক: আজ পহেলা মে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। জাতির ভিত্তি, বাসস্থান ও খাদ্য সবকিছুই দাঁড়িয়ে আছে নারী ও পুরুষ শ্রমিকের ঘাম আর পরিশ্রমের উপর। তাদের নিষ্ঠা ইন্ধন জোগায় অগ্রগতিকে, আর হাত ভবিষ্যত গঠন করে আমাদের। তবু, আজো, অনেকেই তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, অপর্যাপ্ত মজুরি ও প্রাপ্য মর্যাদা অধরা থেকে যায় তাদের স্বপ্ন। অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও মৌলিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার অভাব নারী শ্রমিকদের। সেই জাতির নির্মাতা শ্রমিককে উদযাপনের দিন আজ। কিন্তু কতজনের জন্য এটি সত্যিই একটি উদযাপন?
শুধুমাত্র অতীতকে স্মরণ করার জন্য এই দিনটি নয়। দিনটি এমন একটি ভবিষ্যতের দাবি করে যেখানে প্রতিটি শ্রমিক পাবে তাদের প্রাপ্য ও ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ পরিবেশ এবং তাদের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা। ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের অধিকারের সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে কয়েক দশক ধরে। এখনও প্রতিধ্বনিত হয়, ১৮৮৬ সালের পহেলা মে হেমার্কেটের মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিধ্বনি। আট ঘন্টা কর্মদিবসের জন্য করা ত্যাগের স্মৃতি, একটি যুদ্ধ, যা এখনও জয় করা যায়নি। নিরাপত্তার অভাব, হয়রানির ঝুঁকি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই আজো চলমান নারী কর্মীদের। তাদের ঘাম ও পরিশ্রমের ভালো প্রাপ্য এখনো পায় না তারা।
কর্মক্ষেত্রে তাদের মৌলিক অধিকার আদায়ে লড়াই করে তাদের জন্য কণ্ঠস্বর উত্থাপন করতে হবে আমাদের। এই শ্রমিক দিবস হোক কর্মের আহ্বান, হোক সমস্ত শ্রমিকের জন্য ন্যায়সঙ্গত পৃথিবী গড়ে তোলার অঙ্গীকার।
দিনটি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, রক্তের মূল্য ও অধিকার আদায়ের স্মারক দিবস। দিবসটির প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছিল শ্রমিক সমাজের দীর্ঘদিনের শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস থেকে। অবহেলিত, উপেক্ষিত, অধিকার বঞ্চিত, শোষিত মানুষের নির্ভয় উচ্চারণের দিনের নাম মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দাবি আদায়ের দিন। মে দিবস দুনিয়ার শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। শ্রমিক সমাজের ন্যায্য অধিকার আদায়ের অঙ্গীকারের মাধ্যমেই এ রক্তাক্ত আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। আর শেষ বিজয় হয়েছিল শ্রমিকদেরই। যা বিশ্ব ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং অদ্বিতীয় একটি ঘটনা। ন্যায়বিচারের লড়াইয়ের ক্ষতবিক্ষত এই দিনটি।