নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের চরমরজাল গ্রামে জোর করে বসতবাড়ি দখল ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় সামসুল হকের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী লিয়াকত আলী থানা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও পাচ্ছে না কোনো সুফল।
সরজমিন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত আঃ মন্নাফ মিয়া ১৯৭০ সালে ৮৫৮৩ নম্বর দলিলে ৮৩ শতাংশ জায়গা ধনুরায় দাসের ৩ ছেলে পাকানন্দ দাস, হরিচরণ দাস ও কৃষ্ণচরণ দাসের কাছ থেকে সাব-কাবলা খরিদ করেন। পরে আঃ মন্নাফ মিয়া মারা গেলে ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে ছেলে লিয়াকত আলী উক্ত সম্পত্তিতে বাড়ি করে দীর্ঘদিন পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। হঠাৎ করে গত বছর একই গ্রামের শফর আলীর ছেলে সামসুল হক জায়গাটি তার বলে দাবি করে বসেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা দুপক্ষেকে সাথে নিয়ে একাধিক বার শালিসে বসলেও সম্পত্তি দাবি করা সামসুল হক প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্রাদি আর দেখাতে পারেনি। পরে সে লিয়াকতকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে একাধিক মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আরমান মোল্লা বলেন, গত বছর ভুক্তভোগী লিয়াকত আলী তার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান কানিজ ফাতেমা লাকির দারস্থ হলে তিনি উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদি দেখে লিয়াকত আলীর পক্ষে রায় দেন এবং আমাকে এবং অপর ইউপি সদস্য রমিজ উদ্দিনকে লিয়াকত আলীর প্রকৃত সম্পত্তি দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। আমি সেই মোতাবেক লিয়াকত আলীর পক্ষে গেলে সামসুল হক আমার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা দায়ের করেন। তিনি আরও বলেন, সম্পত্তি দাবি করা সামসুল হক লিয়াকত আলীর সাথে কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই। ভুক্তভোগী লিয়াকত মিয়া গ্রামের একজন সহজসরল ও নিরীহ প্রকৃতির মানুষ। পরে জানতে পারি, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার রমিজ উদ্দিনের যোগসাজশে সামসুল হক এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
ভুক্তভোগী লিয়াকত আলী বলেন, আমার বাবা ১৯৭০ সালে সাব-কাবলা মূলে ৮৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। বাবা মারা যাওয়ার পর সরকারের মনিব ঘরে খাজনাদি পরিশোধ করে আমি ওয়ারিশ সূত্রে বসতবাড়ি করে জমিটি ভোগ দখল করে আসছি। হঠাৎ করে আমি গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার স্ত্রী জোসনা বেগমকে ২০০৮ সালে ৮৯৫৩ নম্বর দলিলমূলে রেজিস্ট্রী করে দেই। এতে চোখ পড়ে সামসুল হক নামে এক ব্যক্তির। সে আমার কোনো রক্তের সম্পর্কের কেও না এমনকি আত্মীয়ও না। তারপরও সে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে দখল করতে চাচ্ছে। গত বছর রমিজ উদ্দিন মেম্বারের নির্দেশে সামসুল হক, এমদাদুল হক ও মিজান সহ বেশ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে ব্রয়লার মুরগির খামার, ১টি ৪ চালা টিনের ঘর, ১টি বাংলা ঘর, ১টি পানির পাম্প সহ প্রায় ৫/৬ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে থানায়ও অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছি না। তিনি আরও বলেন, এসবের পিছনে মেম্বার রমিজ উদ্দিন, এমদাদুল হক ও মিজান কল-কাঠি নাড়াচ্ছে। তাদের কথামত সে আমার বিরুদ্ধে ৪টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমার ২ ছেলে প্রবাসে থাকার কারণে বর্তমানে আমার একমাত্র মেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমি পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের নিকট আমার ও পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
এবিষয়ে জানতে সামসুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।