নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে অবৈধ বালু উত্তোলনের সময় ড্রেজার জব্দ করে পানিতে ডুবিয়ে দিলো গ্রামবাসী।
গত বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর তীড়ে, উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে ড্রেজারটি জব্দ করা হয়। ওই দিন রাতে স্থানীয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে অবগত করলে প্রশাসন ড্রেজারটি জব্দ দেখায়।
ড্রেজার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার।
স্থানীয়রা জানান, নরসিংদী জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিনিয়ত কতিপয় প্রভাবশালী ড্রেজার মালিকরা রায়পুরা সীমানায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। গত বুধবার বিকেলে ড্রেজার দিয়ে উপজেলা চাঁনপুরের মেঘনা নদীর পাড় ঘেসে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ড্রেজারটি আটক করে ডুবিয়ে দেয়। ওই দিন রাতে প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ড্রেজারটি জব্দ দেখানো হয় বলে জানা যায়। গত কয়েকমাসে অবৈধ বালু উত্তোনের দায়ে উপজেলা প্রশাসন, বালু খেকো সুলতানকে দশ লাখ টাকা জরিমানা করে বলে জানা যায়। এরপরও থেমে নেই তার বালু উত্তোলনের অবৈধ কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, সুলতান গংরা প্রায়ই অবৈধ ভাবে চাঁনপুর সীমানা এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে। এলাকাবাসীর বাঁধা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা ক্ষমতা প্রদর্শন করে হামলা -মামলার ভয় দেখিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে। এতে করে এই অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।’
চাঁনপুর এলাকার ফখরুল ইসলাম, কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ড্রেজাড় মালিকরা রাত দিন কৃষিজমি, ভিটেমাটি কেটে বালু নিয়ে যাচ্ছে। আমরা কি এই গ্রামে বসবাস করবো না? স্বাভাবিক জীবনযাপন করার অধিকার কি আমাদের নেই?”
ইউপি সদস্য বশির মিয়া বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সীমান্তে বালুমহাল ইজারা নিয়ে রায়পুরা উপজেলা সীমান্তে ঢুকে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে চাঁনপুরের পাঁচটি গ্রামে নদী ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটামাটি হারা হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন হাজারো পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করতে না পেরে রাতের আধারে মেঘনার পাড়ে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। এতে আমার নিজের জমি বিলীন হয়ে গেছে। বসত ভিটাও বিলীন হওয়ার পথে।
চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। গত আড়াই মাস ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল তারা। এতে চাঁনপুর ইউনিয়নের ফসলি জমি বিলীন হওয়া পথে। ভবিষ্যতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।