নরসিংদীর শহরের কাউরিয়া পাড়া এলাকায় স্পিডবোট ঘাট কে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ মতিন মিয়া গংদের হামলায় স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্র নির্মমভাবে খুন হয়েছে।
নিহত সানিম (১৪) শহরে বাউলপাড়া মহল্লার আমির মিয়ার ছেলে। সে নরসিংদীর আলীজান জুট মিলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় আরও ৩ জন গুরুত্ব আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, নিহত সানিমের পিতা আমির মিয়া (৪২), ছাত্তার মিয়ার ছেলে রায়হান (১৬), খলিলুর রহমানের ছেলে জহিরুল (৪২)।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২.৫০মিনিটে নরসিংদীর কাউরিয়া পাড়া এলাকায় নতুন লঞ্চঘাটের পাশে সরকার অনুমোদিত স্পিডবোট ঘাট অবস্হিত। সরকারের নিয়ম অনুসারে প্রতিবছর ঘাট ইজারা প্রদান করে থাকেন। বিগত বছরে ঘাট ইজারার পেয়েছিলেন স্থানীয় মতিন মিয়া। কিন্তু চলতি বছরে সর্বোচ্চ দরপত্রের মাধ্যমে ঘাট ইজারা পান সাবেক পৌর কাউন্সিলর আলমাস মিয়া। এতে করে আলামস মিয়ার উপর ক্ষুদ্ধ হোন মতিন। বেশ কয়েকবার মতিন ও তার সহযোগীরা স্পিডবোট ঘাটে হামলা এবং চালকদের মারধর করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। স্পিডবোটের চালক ও যাত্রীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রী উঠানামা অনেকাংশে কমে আসে। এর প্রতিকার চেয়ে বেশ কয়েকবার মতিন মিয়ার সাথে আলমাস মিয়া বৈঠক করে ব্যর্থ হোন। সানিম ও তার পিতা আমির মিয়া এবং সানিমের মামা রায়হান জু্ম্মার নামাজ আদায় করার জন্য হাজী আঃ রহমান জামে মসজিদের সামনে গেলে আগে থেকে উৎপেতে থাকা মতিনের নেতৃত্বে তার ছেলে রাব্বি, নাজমুল, লতিফের ছেলে সোহান, সালামের ছেলে সম্রাট, সেন্টু, ছাবিদ, আলফাজের ছেলে অদুদ, সিদ্দিক মিয়ার ছেলে ফরহাদ, জাহাঙ্গীরের ছেলে রুমান সেন্টুর ছেলে তাছিন সহ আরও ১০/১২ জন দা,ছুরি, চাপাতি ও রামদা দিয়ে তাদের উপর হামলা করে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই সানিমের মৃত্যু হয়। তাদের সাথে থাকা বাকি ৩ জন গুরুত্ব আহত হয়। তাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নুশরাত শারমিন সানিমকে মৃত্যু ঘোষণা করেন এবং বাকি ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
নিহত সানিমের মামা জুয়েল মিয়া প্রতিনিধিকে জানান, স্পিডবোট ঘাটের ইজারা পায় সাবেক পৌর কাউন্সিলর আলমাস মিয়া। ঘাটের ইজারাকে কেন্দ্র মতিন ও তার সহযোগীরা বার বার ঘাটে হামলা করে এবং ঘাটের লোকজনকে মারধর করে আসছিলো। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। কি অপরাধ ছিলো আমার ভাগিনার। সে স্কুলে পড়াশুনা করতো। তাকে কেন এত অল্প সময়ের মধ্যে চলে যেতে হবে। তা আমরা মেনে নিতে পারছি না। মতিন, তার ছেলে রাব্বী সহ সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দিতে হবে।
এদিকে সানিমের মা অন্তস্বত্তা অবস্হায় রয়েছে। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ ও স্বামী আহত হওয়ার খবর শুনে বার বার মোর্চা যাচ্ছিলেন।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া এলাকাবাসীকে শান্ত থাকা এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।
এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে