জার্মানির বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে। মঙ্গলবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি, দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে স্থানীয় পাঁচতারা হোটেল ওয়ার্লডর্ফ এস্টোরিয়ায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, জার্মানির বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্য বৃন্দ এবং বাংলাদেশের বন্ধু কয়েকজন বিশিষ্ট জার্মান নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত, জনাব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া,
এনডিসি আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। শুরুতে বাংলাদেশ ও জার্মানির জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ই আগস্টের অন্য সকল শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে প্রেরিত জাতীয় নেতৃবৃন্দের বাণীসমূহ পাঠ করার পর ১৫ আগস্টের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের ওপর নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মান্যবর রাষ্ট্রদূতের সঞ্চালনায় আলোচকবৃন্দ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বাঙালির প্রতিটি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে তাঁর অবিস্মরণীয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। সকলেই তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু, তাঁর আদর্শিক জীবন ও দেশের জন্য তার অমলিন ভালোবাসা, আতœত্যাগ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা সহ ১৫ আগস্টের সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এ মহান নেতা বাংলার মানুষের স্বাধিকার , স্বায়ত্বশাসন ও ন্যায্য দাবী আদায় ও আমাদের একটি মানচিত্র এবং পতাকা দেওয়ার জন্যে তাঁর সারা জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আতœীয় পরিজনদের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাবহুল ১৫ আগস্টের মত মর্মান্তিক অধ্যায় স্বাভাবিক মানবিকবোধসম্পন্ন যে কোনো মানুষকে ব্যথাতুর করে তোলে। তবে বাংলাদেশ সেই শোক আর কষ্ট বুকে চেপে ধরেও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রচেষ্টায় পিছিয়ে পড়েনি। সব হারানোর ব্যথা বুকে নিয়েই বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং অভ্যন্তরীন স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণের পাশাপশি বলিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় স্ব-স্ব অবস্থান থেকে অবদান রাখার জন্যে তিনি সকলকে আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে, ১৫ আগস্টের সকল শহিদ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।