পলাশের ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবের উল হাই এর ক্যাডার নাহিদ হাসান মাইনুলের নেতৃত্বে পূর্ব বিরোধের জেরে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় যুবলীগ নেতাকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম এবং তার শিশু সন্তান ও শ্যালককে মারধর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে পলাশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে ওয়ার্ড যুবলীগ নেতার স্ত্রী শাহানাজ বেগম। এর আগে বুধবার রাতে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত নাহিদ হাসান মাইনুল ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার নেতৃত্বে ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি দুলাল মিয়ার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এতে আহত হয়ে যুবলীগ নেতার স্ত্রী শাহানাজ বেগম পার্শ্ববর্তী গাজীপুরের কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের পথসভায় লোক জমায়েত করা নিয়ে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি দুলাল মিয়ার সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ হয়। এ ঘটনায় বুধবার বিকালে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজন। ওই রাতেই ওয়ার্ড যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
হামলায় যুবলীগ নেতার স্ত্রী শাহনাজ বেগমের বাম হাতে তিনটি সেলাই লেগেছে বলে জানিয়েছেন তার ভাই নাহিম। হামলায় নাহিম নিজেও আহত হয়েছেন।
এদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর মাইনুলসহ তার লোকজন কয়েক ঘণ্টা পর পর মহড়া দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এ কারণে যুবলীগ নেতা দুলাল মিয়া বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

জানাযায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে আওয়ামী লীগের পথসভাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান গ্রুপের সঙ্গে যুবলীগ নেতার কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। ওই দিনই ঘটনাটি সমাধান করে দেন স্থানীয় নেতারা। এর জেরে বুধবার রাতে নাহিদ হাসান মাইনুলের নেতৃত্বে টুটুল মিয়া, মামুন ও মাসুমসহ ১৫-১৬ জন লোহার পাইপ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুলাল মিয়াকে খুঁজতে তার বাড়িতে যান।
হামলায় আহত শাহনাজ বেগম বলেন, ‘ডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নির্দেশ বলেই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। বাধা দিতে এলে আমার দশ বছর বয়সী মেয়ে জুই, ভাই নাহিমকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে বাড়িঘর ভাংচুরসহ লুটপাট করে।’
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান মাইনুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবের উল হাই বলেন, ‘শুনেছি মঙ্গলবার সংসদ সদস্যের পথসভায় দুলাল মিয়ার সঙ্গে যোগ না দেওয়ায় স্থানীয় লোকজনকে মারধর করেছিল। তার স্ত্রীকে মারধর করার ঘটনাটি পুরোই সাজানো।’
ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান তার আধিপত্য বিস্তার করতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।’
জানতে চাইলে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও মারধর করার কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে থানা সূত্রে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে