রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারদের বেতন-ভাতা বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ভলান্টিয়ারদের বেতন থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। শুধু তাই নয়, রায়পুরা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইসিজি মেশিন, ডায়াবেটিক পরীক্ষার মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজস্ব হাসপাতালে নিয়ে যান। ফলে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চিকিৎসকদের। আর এসব অনিয়ম করছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর। তবে বেতন বিতরণে অনিয়মসহ ব্যক্তিগত হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জানা যায়, স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি বেইজড হেলথকেয়ার সার্ভিস শুরু করে সরকার। এই সেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষসহ প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজনকে অবগত করতে প্রকল্পের ভিত্তিতে সারা দেশে হেলথ ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য পরিদপ্তরের অধীন কমিউনিটি বেইজড হেলথকেয়ার অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় কাজের বিনিময়ে প্রণোদনা ভাতা প্রদানে ২৪টি ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকে মোট ৩৬৩ জন মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেয়। এসব ভলান্টিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষদের কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে উৎসাহী করাসহ সরকারি সেবা প্রদানে সহযোগিতা করে আসছেন। ভলান্টিয়ারপ্রতি ৩৬০০ টাকা মাসিক বেতন-ভাতা বা সম্মানী ধরা হয়। প্রকল্পের নানা জটিলতার কারণে ভলান্টিয়ারদের সম্মানী আটকে যায়। সম্প্রতি সব ভলান্টিয়ারকে এক বছরের বেতন বাবদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মোট ১ কোটি ৫৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা হয়। গত ৩ দিন ভলান্টিয়ারদের বেতন-ভাতা বা সম্মানী দেওয়া শুরু করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ভলান্টিয়ারপ্রতি মাসিক ৩ হাজার ৬০০ টাকা করে ৪৩ হাজার ৩শ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের বেতন-ভাতা থেকে ৯০০ টাকা কেটে এককালীন ৪২ হাজার তিনশ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এতে ৩৬৩ জন ভলান্টিয়ার থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইসিজি মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা.খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীরের ভৈরবে অবস্থিত নিজস্ব হাসপাতাল মেডি লাইফ হাসপাতালে নিয়ে যান।
অভিযোগ অস্বীকার করে টিএইচও ডা. খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলেন, কোনো ভলান্টিয়ারকেই বেতন কম দেওয়া হচ্ছে না। সবাই ৪৩,২০০ টাকা করে পেয়েই স্বাক্ষর করছে। এ ব্যাপারে নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।